Sumit Ganguly : ‘হাতে চাবি নিয়ে বোসে আছে ভগবান, একদিন খুলে দেবে ভাগ্যের তালা ভক্তরা আমাকে করবে পুজো, দেবে গলায় মালা, আমি নায়ক হবো, মহা নায়ক হবো…..’ এই গানটি শোনেন নি এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া যায়। তবে শুধু শ্রোতা নয়, টিনসেল দুনিয়ায় পা রাখা প্রতিটি তরুণের স্বপ্ন এটাই হয়ে থাকে যে একদিন সে নায়ক হবে, একদিন সে মহানায়ক হবে। এই প্রবণতা টলি জগতে বেশি দেখা যায়। আর সেটাই তো স্বাভাবিক। কারণ টলি দুনিয়া বড় হয়েছে উত্তম কুমারের মতো মহানায়ককে দেখে। আর এমন স্বপ্ন দেখেছিলেন নব্বইয়ের দশকে বাংলার সিনেমার ভয়াল ভয়ঙ্কর ভিলেন সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়ও। কিন্তু, তার ভাগ্য তাকে হাঁটিয়েছে উল্টোপথে।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowনায়ক হতে পারেননি, তবে ভিলেন হিসেবে বেশ জনপ্রিয়তা কুড়িয়েছেন তিনি। ১৯৯৩ সালের বাংলা ছবি ‘তোমার রক্তে আমার সোহাগ’-এর মাধ্যমে টলি দুনিয়ায় তার অভিষেক হয় সুমিত বাবুর। তারপর থেকে একের পর এক হিট সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। কেঁচো খুঁড়তে কেউটে (১৯৯৩), ফিরিয়ে দাও (১৯৯৪), সংসার সংগ্রাম (১৯৯৫), সুজন সখী (১৯৯৫), দেশ (২০০২), বোম্বাইয়ের বোম্বেটে (২০০৩), দেবীপক্ষ (২০০৪), মন্ত্র (২০০৫), যুদ্ধ (২০০৫), এম এল এ ফাটাকেষ্ট (২০০৬), অভিমন্যু (২০০৬), আই লাভ ইউ (২০০৭)-এর মতো ছবিতে খলনায়কের ভূমিকায় দেখা গেছে সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়কে। এই ধরণের নেগেটিভ চরিত্রে চূড়ান্ত সাফল্য পেয়েছেন অভিনেতা।
সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় চেয়েছিলেন ‘হিরো’ হতে
ভিলেনের চরিত্রে নিজেকে ঢেলে অভিনয় করলেও শুরুতে কিন্তু ‘হিরো’ হওয়ার ইচ্ছে নিয়েই ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেছিলেন এই অভিনেতা। সম্প্রতি, এক সাক্ষাৎকারে এই কথা স্বীকার করেন তিনি। তিনি সময় টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “স্রোতে হাঁটতে-হাঁটতে আমি ভিলেন হয়ে গিয়েছি। আমি ভিলেন হতে আসিনি এই ইন্ডাস্ট্রিতে। ভেবেছিলাম, যা রোল পাব তাই করব। কিন্তু লোকে আমাকে ভিলেন হিসেবেই ভালবাসা উজাড় করে দিয়েছেন। আমি ধন্য হয়েছি।” কিন্তু তার এই কথায় যে আক্ষেপের সুর মেশানো রয়েছে, তাও বোঝা গেছে স্পষ্টভাবে।
ভয়াল ভয়ঙ্কর ভিলেনের চরিত্রগুলি এখন ‘অতীত’ হয়েছে অভিনেতার কাছে
একসময়ের টলি পর্দায় খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করা সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় ওই সাক্ষাৎকারে জানান যে এখন এসব অতীত হয়েছে। আক্ষেপ ও আনন্দের মিশ্রিত সুরে অভিনেতা বলেন, “একটা সময় আমাকে দেখিয়ে বাচ্চাদের ভয় দেখাতেন তাদের বাবা-মায়েরা। আমাকে প্রচণ্ড ভয় পেত ছোট ছেলেমেয়েরা। সেগুলো সেই সময়কার বাচ্চারা দেখে ভয় পেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে, ঠিক সময় খেয়ে নিয়েছে, পড়তে বসেছে, স্কুলে গিয়েছে। তাই আমার এটাই গর্ব যে, আমি এভাবেই ভয় দেখিয়ে অন্তত ৮ থেকে ৯ কোটি বাচ্চাকে মানুষ করেছি, যাঁরা এখন অনেক বড়-বড় হয়ে গিয়েছে। হয়তো চাকরি-বাকরি করছে।” তবে সেসব দিনকে যে অভিনেতা মিস করেন, তাও একবাক্যে স্বীকার করেছেন অভিনেতা।