বর্ষাকাল এলেই বাঙালি উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করে ইলিশের জন্য। বাঙালি ও ইলিশের এই মেলবন্ধন তো আর আজকের নয়! বহুকাল ধরেই ঝমঝম বর্ষায় বাঙালির ভাতের থালায় এক অনন্য সম্ভার হাপিয়ে জায়গা পেয়ে আসছে এই মাছ। ইলিশ মাছ পছন্দ করেন না এমন বাঙালি হয়তো খুব কমই আছেন। কারণ ইলিশের নানা পদ রান্না হয় বাঙালির হেঁসেলে। ইলিশ ভাপা, সর্ষে ইলিশ, ইলিশ পাতুরি হোক বা গরম গরম ইলিশ ভাজা-এসবের স্বাদের কোনো তুলনা হয়না, একথা সত্যি।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowএই বর্ষাকাল হল ইলিশের প্রজননের সময়। তাই সামুদ্রিক ইলিশ এই সময় ডিম দেওয়ার সময় ঝাঁকে ঝাঁকে নদীতে চলে আসে। বাংলাদেশের পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদীই এদের ডিম পাড়ার পছন্দের জায়গা। তবে এই বাংলায় যতই বাহারি মাছ থাকুক না কেন, স্বাদে আর গুণে ইলিশকে রাজা তকমা দেওয়া হয়। কারণ,গবেষণায় দেখা গেছে, ইলিশ মাছে রয়েছে উচ্চমাত্রার প্রোটিন। এছাড়াও এই মাছে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, যা রক্তের কোলেস্টেরল ও ইনসুলিনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এই কারণে বাংলাদেশের জাতীয় মাছ হল ইলিশ।
বর্ষার আগেই টাটকা ইলিশ ঢুকছে মাছের বাজারে
বর্ষার শুরু থেকেই মোটামুটি টাটকা ইলিশ পাওয়া যায় কলকাতা সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গের বাজারে। এমনকি এই মাছ চালান হয় বাইরের রাজ্যেও। মূলত সমুদ্রে এই সময় ট্রলার নিয়ে পাড়ি দেন ইলিশ ধরতে। তাই এই সময় দীঘা মোহনা, কাকদ্বীপ ও ডায়মন্ডহারবারে ইলিশ ভর্তি ট্রলার নিয়ে বাজারে ঢোকেন জেলেরা। আর এবছর বর্ষা না ঢুকলেও টাটকা ইলিশ ঢুকে গিয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে। তবে এখন এক কেজি সাইজের রাজা ইলিশ সেভাবে উঠছে না। তাই আপাতত ছোট সাইজের খোকা ইলিশ দিয়েই রসনা নিবৃত্তি করতে হবে বাঙালিকে।
এবার বেশি ইলিশ মাছ মিলবে বাজারে
এবার লা-নিনা নামের এক প্রাকৃতিক কারণে ভারী বর্ষা হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে দেশজুড়ে। আর বর্ষা ভালো হলে ইলিশের আধিক্য বেশি হয়। তাই এই বছর ইলিশের পরিমান বেশি হতে পারে। ইতিমধ্যে, ব্যান উঠে যাওয়ার পর যেসব মৎস্যজীবীরা ইলিশ ধরতে সমুদ্রে গিয়েছিলেন, তারা কয়েক টন ইলিশ নিয়ে ফিরেছেন। আর এবার ইলিশ বেশি উঠলে তার দামও কম হবে বলে জানা যাচ্ছে। এই বিষয়ে এক মৎস্যজীবী জানান, “আশা কখনও ছাড়তে নেই। এবার পরিস্থিতি অনেকটাই অনুকূল। ট্রলি ফিশিং-এ মাছ আসছে। আসা করা যায় ট্রলারেও মাছ পড়বে। এখন দেখার এবার কত মাছ আসে উপকূলে। মাছের যোগান বেশি হলে সেক্ষেত্রে কমতে পারে দাম।”