গত বছর ২ রা জুন ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পড়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। দ্রুত গতিতে যাওয়ার সময়ে একটি মালগাড়ির পিছনে ধাক্কা মারে ট্রেনটি। যার জেরে লাইন থেকে ছিটকে পড়েছিল যাত্রী-ভর্তি ওই ট্রেনের কয়েকটি কামরা। কয়েকশো যাত্রীর প্রাণ অকালে ঝরে গিয়েছিল। আহতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছিল। সেই জুনের স্মৃতি ফের টাটকা হল এই জুনে। দাঁড়িয়ে থাকা ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনকে ধাক্কা মারে একটি মালগাড়ি। আর তাতেই কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের শেষ দুটি কামরা দুমড়ে-মুচড়ে যায়। শূন্যে ভাসতে থাকে একটি কামরা। সোমবার সকালেই এই ভয়াবহতা দেখেছে উত্তরবঙ্গ।
সব খবর মোবাইলে পেতে 👉🏻
Join Nowমিডিয়া সূত্রে জানা গেছে, নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের পর রাঙাপানি স্টেশন পেরিয়ে নীচবাড়ি এবং চটেরহাটের মাঝখানে ফাঁকা জায়গায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। সোমবার সকাল ৯ টা নাগাদ এই স্থানে সিগন্যাল না পেয়ে দাঁড়িয়েছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। এদিকে পিছন থেকে একই লাইনের সিগন্যাল পেয়ে এগিয়ে আসছিল একটি লোডেড মালগাড়ি। মুষলধারে বৃষ্টিপাতের কারণে সেই স্থানের দৃশ্যমানতাও কম ছিল। আর এই অবস্থায় দ্রুত গতিতে মালগাড়িটি ধাক্কা মারে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পিছনে। এর ফলে শেষ দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে।
সিগন্যালিংয়ের ত্রুটির কারণেই কি এই দুর্ঘটনা?
এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে সিগন্যালিংয়ে ত্রুটির কারণেই কি এই দুর্ঘটনা ঘটল? এই বিষয়ে এখনো পূর্ণাঙ্গ কোনো তদন্ত হয়নি। তবে রেলের প্রাথমিক অনুমান এটাই যে সিগন্যালিং বিভ্রাটের জেরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারেন। কারণ উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গের উদ্দেশ্যে আসা মালগাড়ি ও এক্সপ্রেস ট্রেনকে সাধারণত একই লাইনে চালানো হয়না। তবে নিতান্তই উপায় না থাকলে মালগাড়িকে দাঁড় করিয়ে এক্সপ্রেস ট্রেনকে পাস করানো হয়। এদিনও তেমনটাই হয়তো পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে লাইনে থাকা লাল সিগন্যাল হয়তো দেখতে পাননি মালগাড়ির চালক। তাই সেটি সজোরে গিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে ধাক্কা মেরে থাকতে পারে।
একাধিক ট্রেন কাছাকাছি এলে ‘কবচ সিস্টেম’ কাজ করেনি কেন?
সিগন্যালিংয়ে ভুল দেখানো হোক কিংবা সিগন্যাল বিভ্রাট অথবা চালকের সিগন্যাল দেখতে না পাওয়া, যেকোনো ঘটনার পরেও রেল দুর্ঘটনার হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য দেশের রেল ব্যবস্থায় রয়েছে কবচ সিস্টেম। এটি এমন একটি স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম, যা রেলের লাইনে লাগানো থাকে সেন্সর সমেত। এতে যেকোনো দুটি ট্রেন এক লাইনে কাছাকাছি এসে গেলে কয়েক মিটারের ব্যবধানে দাঁড়িয়ে পরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। তাহলে এক্ষেত্রে কি কবচ কাজ করেনি? এই প্রশ্নের উত্তর এখনো দিতে পারেনি রেল। হয়তো তদন্তের পর এটা নিয়েও কোনো সাফাই শোনা যাবে রেলমন্ত্রীর মুখে।